পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে রাতারাতি পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। কিন্তু গত তিন থেকে চারদিন ধরে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসছে বাজারে, নতুন এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। মুড়িকাটা এসব পেঁয়াজ বাজারে আসায় অন্যান্য পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে, যার ফলে সাধারণ ভোক্তাদের চোখে মুখে ফিরেছে স্বস্তি।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মিরাশার চাষি বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পেঁয়াজ আবাদের সময় লাগাতার বৃষ্টিপাত হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ১২ থেকে ১৫ দিন দেরিতে বাজারে এসেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। শরীয়তপুরে ৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪৮ হাজার ৫৮০ টন। জেলার সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয় জাজিরা উপজেলায়।
জাজিরার বড় কৃষ্ণ নগর ইউনিয়নের হাওলাদার কান্দি গ্রামের কৃষক আবুল কালাম সিকদার মিরাশার চাষি বাজারে পাইকারি দরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করতে এসেছেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজারে আজ ৯০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করলাম। পেঁয়াজের বীজ বপনের সময় লাগাতার বৃষ্টির কারণে আবাদ করতে ১৫ থেকে ২০ দিন দেরি হয়ে গেছে। তাই ফলন পেতেও একটু বেশি সময় লেগেছে। ৩ বিঘা জমিতে এবছর পেঁয়াজ আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রতি বিঘা জমির পেঁয়াজ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।
মিরাশার চাষি বাজার সমবায় সমিতির বাজার সভাপতি ও পাইকার আব্দুল জলিল মাদবর ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত তিন থেকে চারদিন যাবত কৃষকরা বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসা শুরু করেছেন। তিন দিন আগে ভালো মানের মুড়িকাটা পেঁয়াজের পাইকারি দাম ছিল ১৪০ টাকা কেজি। তিন দিনের ব্যবধানে এখন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে। পেঁয়াজ উত্তোলন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দাম আরও কমে আসবে। তবে যে সব এলাকা উঁচু ওইসব এলাকার কৃষকরা এখন ফসল তুলে বেশ দাম পাচ্ছেন।
শরীয়তপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পেঁয়াজ আবাদের সময় ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে লাগাতার বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফলন আসতে ১২ থেকে ১৫ দিন দেরি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে কিছু কিছু উঁচু জমির মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হওয়ায় বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু হয়েছে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হলে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।