অফশোর ব্যাংকিং আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা

‘অফশোর ব্যাংকিং আইন ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিফিংকালে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন৷

তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে অনিবাসি ব্যক্তি বা বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান যারা এখানে ইনভেস্ট করবে তারা অফশোর অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে। অফশোর ব্যাংকিং করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। আর যারা এই লাইসেন্স পেয়েছে তাদের নতুন করে আর লাইসেন্স নিতে হবে না। মার্কিন ডলার, পাউন্ড, ইউরো, জাপানি ইয়েন এবং চাইনিজ ইয়ান- এই পাঁচটি মুদ্রায় ব্যাংকিং কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে।

তিনি বলেন, এই আইনের আওতায় অফশোর ব্যাংকিং করার জন্য তফসিলি ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো লাইসেন্স গ্রহণ করবে। এরপর অনিবাসি বাংলাদেশে বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত গ্রহণ করতে পারেব, ঋণ দিতে পারবে। ওই আমানত স্বাভাবিক ব্যাংকিং পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে পারবেন। বিদেশে যে বাংলাদেশি আছেন তার পক্ষে তার কোনো আত্মীয় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন, সহায়তাকারী হিসেবে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারবেন।

তিনি বলেন, ঋণ সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। যে কোনো পরিমাণ ঋণ নিতে পারবে। সমসাময়িক আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থার সঙ্গে সংগতি রেখে অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ১৯৮৫ সালে এটি বাংলাদেশে প্রথম ইপিজেডে শুরু হয়, সেখানে কিন্তু কারেন্ট অ্যাকাউন্টের মতো, কোনো ইন্টারেস্ট দেওয়া হতো না। এখন অফশোর ব্যাংকিংয়ে ইন্টারেস্ট দেওয়া হবে।

আরো পড়ুন  শীর্ষ করদাতার সম্মাননা পেলো ইসলামী ব্যাংক

ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে পারলে, ব্যাংকের নরমাল ব্যবসার প্রয়োজনে সে যখন বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তার তুলনায় ব্যয় কম হবে। বহু দেশ এ পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের বৈদেশিক রিজার্ভ ও আর্থিক কাঠামোকে সমৃদ্ধ করেছে। তারা বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট পেয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশিরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যখন টাকা জমা রাখে তখন কিন্তু টাকা নিয়ে যেতে পারমিশন নিতে হয়। অফশোর হলে স্বাধীনভাবে এটা অপারেট করা যাবে। এখানে ব্যবসা করে যারা লাভবান হবে তারা এখানে টাকা রাখতে আগ্রহী হবে বলে আমরা আশা করছি।

মাহবুব বলেন, শুধু রিজার্ভ বাড়াতেই এটি করা হচ্ছে না। অর্থনৈতিকভাবে আমরা লাভবান হব সেজন্য আমরা এটি করছি। তবে ব্যাংক কাকে লোন দেবে সেটি ব্যাংকের বিষয়। এসব অ্যাকাউন্টে যে লেনদেন হবে সেই সুদের ওপর কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না। ইকনোমির দিকে তাকিয়ে এটি চালু করা হচ্ছে। সরকার মনে করেছে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অনেক দেশ সুফল পেয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই অ্যাকাউন্টে কেউ টাকা রাখলে কোথা থেকে টাকা এসেছে তা কেউ জিজ্ঞাসা করবে না। ওই টাকার ওপর যে সুদ পাবেন তা নিয়ে যেতে পারবে। যিনি ইনভেস্ট করবেন বা যে প্রতিষ্ঠান ইনভেস্ট করবে হয় সে বিদেশে থাকে নয়ত বিদেশি। সেভিং অ্যাকাউন্ট যেভাবে পরিচালনা করেন সেভাবেই এই অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করা যাবে। ওই অ্যাকাউন্টে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা জমা দেওয়া যাবে।

এ ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে সন্দেহজনক লেনদেন বা জঙ্গি অর্থায়ন সহজ হবে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশি মুদ্রাই তুলতে হবে, টাকা তোলা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *