দুদিনের ক্যারিয়ার সামিট করবে বিজিএমইএ

দুই দিনব্যাপী বিজিএমইএ ক্যারিয়ার সামিট শুরু হচ্ছে আগামী ২৩ ডিসেম্বর। ওইদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় এ সামিট উদ্বোধন করা হবে। যা চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সামিটে ৪০টিরও বেশি স্বনামধন্য নিয়োগদানকারী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে। এতে অবারিতভাবে সিভি ড্রপ এবং অনস্পট ইন্টারভিউয়ের সুযোগ থাকবে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ক্যারিয়ার সামিটে দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল কলেজ, বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শেষ বর্ষের এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা- যারা পোশাক শিল্পে চাকরি করতে ইচ্ছুক, তাদের সবার জন্য অবারিতভাবে সিভি ড্রপ এবং অন স্পট ইন্টারভিউ প্রদানের সুযোগ উন্মুক্ত থাকবে।

ফারুক হাসান লিখিত বক্তব্যে জানান, ক্যারিয়ার সামিটে বিভিন্ন গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। ইভেন্ট চলাকালে তারা বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করবেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে কেউ কেউ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দিবেন। এ ইভেন্টটি সামগ্রিক শিল্প নিয়ে মতবিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সহযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তুলবে। বিজিএমইএ ক্যারিয়ার সামিট শিক্ষার্থী এবং নিয়োগদানকারী কোম্পানিগুলোকে একই ছাদের নিচে আনবে। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সম্ভাব্য সুযোগ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবে। এ ইভেন্ট থেকে অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটরা জানবে বর্তমানে পোশাক শিল্পে চাকুরির চাহিদা কেমন ধরনের এবং তারা সে অনুযায়ী নিজেরা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। আমাদের দেশে অনেক গ্র্যাজুয়েট আছে, তারা এ বিষয়ে প্রকৃত ধারণা না থাকার কারণে যোগ্য স্থানে যেতে পারছে না। চাকুরির বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে তাদেরকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। এছাড়া সামিটে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীনরাও উপস্থিত থাকবেন।

আরো পড়ুন  কমলো সোনার দাম

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমাদের শিল্পকে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই করার অব্যাহত প্রচেষ্টার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রেতারাও সম্পৃক্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি বেস্ট সেলার ও এইচ অ্যান্ড এম, গ্লোবাল ফ্যাশন এজেন্ডার সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে একটি বিশেষ প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। উইন্ডমিলভিত্তিক এ প্রকল্প থেকে প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, যার মাধ্যমে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমবে। আমরা এ উদ্যোগটিকে স্বাগত জানাই। অন্যান্য ক্রেতারাও এ দৃষ্টান্ত অনুসরণে এগিয়ে আসবেন।

ফারুক হাসান বলেন, স্বাধীনতা উত্তরকালে বাংলাদেশ যে কটি ক্ষেত্রে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্পখাত। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প তার যাত্রাপথে অনেক চড়াই-উৎড়াই অতিক্রম করে আজ ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বার্ষিক রপ্তানি টার্নওভারের শিল্পে পরিণত হয়েছে। জিডিপিতে ১১ শতাংশ অবদান রাখা পোশাক শিল্প প্রত্যক্ষভাবে ৪০ লাখ মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ মিলে প্রায় ২ কোটির মানুষের জীবন-জীবিকা পোশাক শিল্পের উপর নির্ভরশীল। পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি।

পোশাক শিল্পের দৃপ্ত পদচারণা, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গৌরবময় পরিচিতি এনে দিয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে আর্থ সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে।

ফারুক হাসান বলেন, আমরা মনে করি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাজে লাগানোর জন্য শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য চাহিদা নির্ভর, যুগোপযোগী পাঠক্রম প্রণয়ন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যারা বের হচ্ছে, তাদের দক্ষতা এবং শিল্পের চাহিদার মধ্যে ব্যবধান রয়েছে। শিল্প-একাডেমিক সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে বৈচিত্র্যময় পণ্যগুলোতে যাওয়ার জন্য আমাদের সক্ষমতার উপর। আর এজন্য উন্নত দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষার প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে শিল্পের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে এবং এ সংযোগে ব্যবহারিক শিক্ষাকে আরও নিবিড়ভাবে একীভূত করতে হবে। বিজিএমইএ ক্যারিয়ার সামিট ও ফেস্টের অন্যতম উদ্দেশ্যও এটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *