ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের নিচে থাকা হামাসের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কে সমুদ্রের পানি প্রবেশ করানো শুরু করেছে ইসরায়েল। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
ইসরায়েলের বিশ্বাস, হামাস তাদের এই সুড়ঙ্গে বন্দি, যোদ্ধা এবং যুদ্ধাস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় হামাসের টানেল কমপ্লেক্সে সমুদ্রের পানি পাম্প করা শুরু করেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। অবশ্য পানি ঢোকানোর কাজ শুরু হলেও এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সম্ভবত কয়েক সপ্তাহ সময় নেবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা বলেছেন, পানি প্রবেশ করানোর এই প্রক্রিয়াটি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতে সাহায্য করতে পারে। কারণ ইসরায়েল বিশ্বাস করে, যোদ্ধা এবং যুদ্ধাস্ত্রের পাশাপাশি ইসরায়েলে হামলার সময় আটক হওয়া বন্দিদের সুড়ঙ্গে লুকিয়ে রেখেছে হামাস।
অবশ্য অন্য কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, টানেলে সমুদ্রের পানি প্রবেশ করানো হলে তা গাজার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহকে বিপন্ন করবে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এছাড়া ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।
এর আগে হামাসের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক সমুদ্রের পানিতে প্লাবিত করার কথা ইসরায়েল বিবেচনা করছে বলে খবর বের হয়। তখন ফিলিস্তিনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) সতর্কতা উচ্চারণ করে বলে, যদি গাজায় পাম্পের মাধ্যমে সুড়ঙ্গগুলো সমুদ্রের পানি দিয়ে ভরা হয়; তাহলে সেটির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো গাজার ওপর।
তারা জানায়, সুড়ঙ্গে পানি দিলে এগুলোর আশপাশে যেসব ভবন আছে সেগুলো ধসে পড়বে। যারমধ্যে আবাসিক ভবনও রয়েছে। ভবন ধসে সেখানে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হবে।
এছাড়া এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি এবং ময়লা পানির সঙ্গে সমুদ্রের পানির মিশ্রন হয়ে যাবে। এতে স্বাস্থ্যখাতে বিপর্যয় দেখা দেবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।