নামাজের নিষিদ্ধ সময়ে আমল করা যাবে?

দিনের এমন কিছু সময় রয়েছে, যখন নামাজ পড়া শরিয়তের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ। এই সময়গুলোতে ফরজ, ওয়াজিব ও নফল কোনো ধরনের নামাজ আদায় করা জায়েজ নেই। এমনকি কাজা নামাজও পড়া যাবে না। এই সময়গুলো হলো—
এক. সূর্যোদয়ের সময়, অতএব সূর্য পুরোপুরি উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত নামাজ পড়া যাবে না। (বুখারি, হাদিস, ১৫২৩)

দুই. সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময়। সূর্য ঢলে পড়লে— পুনরায় নামাজ পড়ার বৈধ সময় শুরু হয়। (মুসলিম, হাদিস, ১৩৭৩)

তিন. সূর্য যখন হলুদ বর্ণ ধারণ করে, তখন থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে কারও যদি আসর নামাজ পড়তে দেরি হয়ে যায়, তাহলে সে ব্যক্তি সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত আদায় করতে পারবে। (বুখারি, হাদিস, ৫৪৫)

এই সময়ে শয়তানের পূজারিরা শয়তানের পূজা করত। শয়তানের পূজার সঙ্গে যেন সাদৃশ না হয়ে যায়, এই কারণেই রাসুল (সা.) নামাজ পড়া থেকে সতর্ক করেছেন।
নামাজের নিষিদ্ধ সময়ে জানাজা এলে— তা আদায় করতে পারবে, তবে তা মাকরুহ হবে। একইভাবে কোনো ব্যক্তি যদি এ সময় আয়াতে সিজদা পাঠ করে, তাহলে তিনি সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে পারবেন; কিন্তু তা মাকরুহ হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৫৬; সহিহ বুখারি, হাদিস : ১২৩১; মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৩; সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ৩৩)

২ ওয়াক্ত নামাজ কাজা হলে আগে যেটি পড়বেন
যে ৩ ধরনের নামাজ কবুল হয় না
তবে এই সময়ে নামাজ ছাড়া অন্য যেকোনো ইবাদত- যেমন কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ, তাহলিল পাঠ করা যাবে। এতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আর হাদিস শরিফে দিনরাতের যেকোনো সময় কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لا حَسَدَ إلَّا في اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ عَلَّمَهُ اللَّهُ القُرْآنَ، فَهو يَتْلُوهُ آناءَ اللَّيْلِ، وآناءَ النَّهارِ، فَسَمِعَهُ جارٌ له، فقالَ: لَيْتَنِي أُوتِيتُ مِثْلَ ما أُوتِيَ فُلانٌ، فَعَمِلْتُ مِثْلَ ما يَعْمَلُ، ورَجُلٌ آتاهُ اللَّهُ مالًا فَهو يُهْلِكُهُ في الحَقِّ، فقالَ رَجُلٌ: لَيْتَنِي أُوتِيتُ مِثْلَ ما أُوتِيَ فُلانٌ، فَعَمِلْتُ مِثْلَ ما يَعْمَلُ
দুই ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো সাথে ঈর্ষা করা যায় না। এক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ তায়ালা কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন এবং সে তা দিন-রাত তিলাওয়াত করে। আর তা শুনে তার প্রতিবেশী তাকে বলে, হায়! আমাকে যদি এমন জ্ঞান দেয়া হতো, যেমন অমুককে দেয়া হয়েছে, তাহলে আমিও তার মতো আমল করতাম। অন্য আর এক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ্ সম্পদ দান করেছেন এবং সে সম্পদ সত্য ও ন্যায়ের পথে খরচ করে। এ অবস্থা দেখে অন্য এক ব্যক্তি বলে, হায়! আমাকে যদি অমুক ব্যক্তির মত সম্পদ দেয়া হত, তাহলে সে যেমন ব্যয় করছে, আমিও তেমন ব্যয় করতাম। (বুখারি, হাদিস, ৫০২৬)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *