প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। হাদিস ও সীরাতের কিতাবে এর বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। নামাজে, নামাজের বাইরে, রাতের আঁধারে, দিনের আলোতে সবসময় তিনি তিলাওয়াত করতেন। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. বলেন, নামাজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নবীজী এত দীর্ঘ সময় তিলাওয়াত করতেন যে, তার পা মুবারক ফুলে যেত। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ২৮১৯, ২৮২০)
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নিজে তিলাওয়াত করতেন তেমনি সাহাবিদের থেকেও তিলাওয়াত শুনতেন। একবার নবীজী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-কে বললেন, তুমি আমাকে একটু তিলাওয়াত করে শোনাও তো। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, আপনার উপরই তো কোরআন নাযিল হয়েছে! নবীজী বললেন, আমার মন চাচ্ছে, কারো থেকে একটু তিলাওয়াত শুনি! এ শুনে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সূরা নিসা তিলাওয়াত করতে শুরু করলেন। পড়তে পড়তে যখন এ আয়াত পর্যন্ত আসলেন-
فَكَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَهِیْدٍ وَّ جِئْنَا بِكَ عَلٰی هٰۤؤُلَآءِ شَهِیْدًا
[সুতরাং (তারা ভেবে দেখুক) সেই দিন (তাদের অবস্থা) কেমন হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং (হে নবী), আমি তোমাকে ওইসব লোকের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব? -(সূরা নিসা, (০৪), আয়াত, ৪১)
এতটুকু তিলাওয়াত করার পর নবীজী বললেন, ঠিক আছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, নবীজী থামতে বলার পর আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখি, তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস, ৫০৫৫, ৪৫৮২, ৫০৪৯)